অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯ এ প্রকাশ হতে যাচ্ছে শান্তনু চৌধুরীর লেখা ‘টেলিভিশন সংবাদ উপস্থাপনা ও কৌশল’ বইটি। বইটি প্রকাশ করছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
সময় এখন টেলিভিশন সাংবাদিকতার। সাহসী ও আলোচিত পেশা বলা যায় এটিকে। তরুণ-তরুণীরা নিজেকে মেলে ধরার জন্য ঝুঁকছেন এই পেশায়। তুলে আনছেন তৃণমূল থেকে আলোচিত নানা প্রতিবেদন। হাতে বুম, কাঁধে ব্যাকপ্যাক, ট্রাইপড, ক্যামেরা নিয়ে একেক জন ছুটে চলছেন এখান থেকে সেখানে। নিরন্ন মানুষ থেকে বিপন্ন মানুষ। সন্ত্রাসের শিকার থেকে শিকারী, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে বিশ^মোড়ল। দেশ থেকে বিদেশ সবখানেই সরব উপস্থিতি টিভি সাংবাদিকদের।
প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকতা তাত্ত্বিক নয়, ব্যবহারিক জ্ঞান। দেশের প্রায় সব বিশ^বিদ্যালয়ে এ নিয়ে পাঠদানও করানো হয়। একই সঙ্গে আগ্রহ রয়েছে নিউজ প্রেজেন্টার হওয়ার প্রতিও। অর্থাৎ বলা যেতে পারে পেশা হিসেবে টেলিভিশন সাংবাদিকতা এখন বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের কাছে। এর মধ্যে সবারই স্বপ্ন থাকে সংবাদ উপস্থাপক হওয়ার। তাই এ নিয়ে প্রয়োজন আলাদা করে প্রস্তুতির। কারণ এখন আর স্ক্রিপ্ট দেখে খবর পড়ার যুগ নেই। এখন একজন সংবাদ উপস্থাপক মানে প্রথমেই তিনি একজন সংবাদকর্মী। তাকে তাকে ধারণা থাকতে হবে সংবাদ নিয়েও। হয়তো আপনার মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু সঠিক গাইডনেস এর অভাবে সেদিকে বেশ অগ্রসর হতে পারছেন না।
যারা শুরুতে টিভি সাংবাদিকতায় আসতে চান তাদের সহযোগিতার জন্য নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এই বই লিখেছেন শান্তনু চৌধুরী। এটি একইসঙ্গে নিউজ প্রেজেন্টার হওয়ার শুরুর ধাপটা পার হতে যেমন প্রয়োজন তেমনি সাংবাদিক হয়ে উঠার ক্ষেত্রেও প্রস্তুত করবে আপনাকে। সে দিকটি মাথায় রেখেই লেখা হয়েছে বইটি। কারণ তাত্ত্বিক আর প্রায়োগিক জ্ঞানই পারে একজন সফল উপস্থাপক সৃষ্টি করতে। বাকিটা চেষ্টা, ধৈর্য আর সংকল্প।
শান্তনু চৌধুরীর সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা এক যুগেরও বেশি। একুশ শতকের শুরুতে হাতেখড়ি হয় একুশ শতকের দৈনিক স্লোগান নিয়ে আসা প্রথম আলোতে। ফিচার বিভাগ দিয়ে কাজ শুরু হলেও পরে তিনি ঝুঁকে পড়েন মাঠের সাংবাদিকতার দিকে। কাজ করেছেন, প্রথম আলো, জনকণ্ঠ, যুগান্তর, বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ, সুপ্রভাত বাংলাদেশ, ভোরের কাগজ ও সংবাদপত্র নামের দৈনিকে। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি থেকে শুরু করে আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং রাজধানীতে এসে রাজনৈতিক, ক্রাইমসহ উন্নয়ন সাংবাদিকতার বিভিন্ন বিষয়ে রিপোর্ট করার অভিজ্ঞতা তাকে সমৃদ্ধ করেছে। দেশের অনেক বড় বড় ঘটনার সাক্ষীও তিনি। কাগুজে আর অনলাইন সাংবাদিকতা ছেড়ে তিনি একসময় যোগ দেন শ্রুতিনির্ভর সংবাদ মাধ্যম এবিসি রেডিও’তে। এরপর এসএটিভিতে।
বর্তমানে কাজ করছেন চব্বিশ ঘণ্টা সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেল সময় টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক হিসেবে। আবার শিল্পী তিনি, সমাজের দায়ও তাকে মেটাতে হয়। সেই ভাবনা থেকে সমান তালে লিখে চলেছেন গল্প, কবিতা ও উপন্যাস। প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে ফিরে এসো, নারীসঙ্গ, অন্য সময়ের প্রেম, পর সমাচার এই যে, রসিকা, টেলিভিশন সাংবাদিকতা, সূর্যোদয়ের আগে উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উত্তর ঢেমশা গ্রামে জন্ম নেয়া শান্তনু চৌধুরী প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ শেষ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।