চলমান যুগকে বলা হয় আধুনিক ও বিশ্বায়নের যুগ। আধুনিকতা কি পশ্চিমাকরণ প্রকল্প? উগ্র জাতীয়তাবাদের সাথে বিশ্বায়নের দ্বন্দ্ব কেন? অনিয়ন্ত্রিত পুঁজিবাদ ও ভোগবাদের সাথে বিশ্বায়নের আন্তরিক সম্পর্কের নেপথ্য কি?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ কি অঘোষিত সাম্রাজ্য পরিচালিত করছে? গুগল, টুইটার, ইউটিউব ও ফেসবুকের তথ্য সাম্রাজ্যবাদের মাধ্যমে কি ব্যবহারকারীদের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে নিচ্ছে বিশ্বায়নপন্থীরা? বিশ্বায়নের কারণে আসা পশ্চিমা নারীবাদ কি নারীকে পুঁজিতে পরিণত করে পুরুষতন্ত্রকেই শক্তিশালী করছে? বিশ্বায়ন ও ইহুদীবাদের মধ্যে সম্পর্ক কি? এ বিশ্বায়ন কি মানুষের জন্য কল্যাণকর? কল্যাণকর হলে কতটুকু? ক্ষতিকর হলেই বা কতটুকু ক্ষতিকর?
বিশ্বায়নের কাঁধে চড়েই কি বৃহৎ অর্থনীতি ও সমরশক্তির দেশগুলো অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র দেশ ও জাতিগুলোর অর্থনীতিকে গ্রাস করছে? নিজস্ব সংস্কৃতি একটি জাতির টিকে থাকার জ্বালানি শক্তি। সংস্কৃতি থাকলে জাতির স্বাতন্ত্র্য থাকবে, আর স্বাতন্ত্র্য থাকলেই সেই জাতি গৌরবে এ পৃথিবীতে টিকে রইবে, সংস্কৃতি না থাকলে একটি জাতির স্বনির্ভর উৎপাদনব্যবস্থায় ধস নামবে। সেই কৃষ্টি-সংস্কৃতির উপর বিশ্বায়নের সুবিধাভোগী আধিপত্যবাদীদের সংস্কৃতির একচ্ছত্র খবরদারি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাংস্কৃতিক সা¤্রাজ্যবাদকেই কি পরিচিত করানো হচ্ছে ‘সংস্কৃতি বিনিময়’ নামে? বিশ্বায়নের নামে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে দেশে দেশে? এই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে গণমাধ্যম। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের চূড়ান্ত রূপ অর্থনৈতিক আগ্রাসন। অর্থনৈতিক আগ্রাসন জাতির মেরুদ-কে নড়বড়ে করে দেয়। বাংলাদেশের উপর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে। এটি নৈতিক চরিত্র হরণের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী ও কল্যাণকর মূল্যবোধ ও সামাজিক কাঠামোকে ভেঙে দিচ্ছে, উৎপাদনব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। তার প্রভাব ও ব্যাপ্তি অত্যন্ত বিস্তৃত।
এখনই যদি এ সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধ করা না যায় তবে লাল-সবুজ পতাকার স্বাধীনভাবে পতপত করে উড়ার শক্তি হ্রাস পাবে। মানবতা বনাম পুঁজিবাদ ও নব্যসাম্রাজ্যবাদ বনাম জাতীয়তাবাদ থেকে রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর মিছিল ও রাষ্ট্রীয় বন্ধুত্বের বহুরূপ; ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্তা রূপে জার্মানির উত্থান থেকে হামবুর্গের বিশ্বায়নবিরোধী বিক্ষোভ; কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা থেকে তুরস্কের রজব তাইয়িব এরদোয়ানের নয়া ওসমানীয় সাম্রাজ্যবাদ; মূলধারার গণমাধ্যম বনাম সামাজিক মাধ্যম থেকে পুরুষতান্ত্রিক নারীবাদ বনাম বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি এবং এসবের রাজনৈতিক অর্থনীতি ও বহুমাত্রিক প্রভাব-প্রতিবয়ান নিয়ে জটিল ও বিস্তৃত পরিসরে ভাবনা ও আলোচনার সময় এসেছে।
সেই ভাবনার পুঁথিগত রূপ ‘বিশ্বায়ন, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও গণমাধ্যম’।
বইমেলায় পাওয়া যাবে বইটি।
প্রকাশক : শিখা প্রকাশনী
পৃষ্টা সংখ্যা : ৩১২
দাম : ৪০০ টাকা