www.muktobak.com

ঋণ খেলাপি গণমাধ্যম মালিক; প্রশ্নবিদ্ধ নৈতিকতা


 মুক্তবাক রিপোর্ট:    ২৫ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:১৪    মতামত


(সংসদে প্রকাশিত ঋণখেলাপিদের তালিকায় বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম মালিক রয়েছেন। এ নিয়ে মুক্তবাকে যেসব গণমাধ্যমের মালিক ঋণ খেলাপির তালিকায় রিপোর্ট পড়েছেন। বাংলাদেশি গণমাধ্যমকে খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এমন দুজনের মতামত তুলে ধরছি মুক্তবাকের পাঠকদের কাছে।)

এক.

ঋণ খেলাপির বিষয়টিই আমরা খুব স্বাভাবিক করে নিয়েছি। এটি যে বড় ধরনের অপরাধ সেই বোধ আমরা হারিয়ে ফেলছি। এই রাষ্ট্রের গণমানুষের টাকাগুলো চলে যাচ্ছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে ঋণের নামে। কী আশ্চর্য, তারা সেই টাকাগুলো ফেরত দিচ্ছে না! এটি সুস্পষ্ট অপরাধ। বড় ধরনের অপরাধ। এমন অপরাধ ধরিয়ে দেওয়া যাদের কাজ, যারা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, সেই গণমাধ্যম মালিক/প্রকাশকগণও এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এটি দু:খজনক। দুর্ভাগ্যজনক।

এমন অনৈতিক চর্চায় নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখে আরেক গোষ্ঠীর অনৈতিকতার অনুসন্ধান করা হাস্যকর ও স্ববিরোধীতা। মনে রাখতে হবে, গণমাধ্যম একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান শুধু নয়; অন্যদেরকে দায়িত্বশীল করবার দায়িত্বও গণমাধ্যমের। সেই জায়গাটিতে বড় ধরনের আঘাত প্রকাশিত এই তথ্যগুলো।

গণমাধ্যমের মালিক হওয়া মানে সব জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে যাওয়া নয়। বরং গণমাধ্যমের কাছে থেকেই মানুষ সর্বোচ্চ জবাবদিহিতা আশা করে। প্রচলিত অনেক সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি  যেসব গণমাধ্যমের মালিক ঋণ খেলাপির তালিকায় এই প্রতিবেদন গণমাধ্যমের আরেকটি অন্ধকার দিক উন্মোচিত করল। এখন দেখবার বিষয়, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বিষয়টিকে কীভাবে মোকাবেলা করে।

রফিক রুম্মান : গবেষক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক।

গণমাধ্যমের মালিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হলে তা খবর প্রকাশের বিষয়কে কিভাবে প্রভাবিত করে, রোববার, ২৩ জুনের সংবাদপত্রগুলো সম্ভবত: তার প্রামাণ্য দলিল হয়ে রইলো।

অধিকাংশ কাগজেই খবরটি শীর্ষসংবাদ হিসাবে ছাপা হয়েছে এবং অনেকেই ৩০০ খেলাপির পুরো তালিকাটি ছেপে দিয়েছেন। ছাপানো তালিকাসূত্রে আমরা জানি রুপায়ণ হাউজিংয়ের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০০০ কোটি টাকার ওপরে এবং খেলাপিদের তালিকায় তাঁদের অবস্থান ৪২ নম্বরে। তাঁদের নতুন প্রকাশনা দেশ রুপান্তরের শীর্ষসংবাদও অন্যান্য কাগজের মতোই এই তালিকা। কিন্তু, তারা শীর্ষ পাঁচ খেলাপির নামপ্রকাশের মধ্যেই খবরটির পরিধি সীমিত রেখেছেন। বাকি তালিকাটি ছাপেন নি।

প্রশ্ন হচ্ছে পত্রিকাটির সাংবাদিকদের সম্পাদকীয় স্বাধীনতা থাকলে তাঁরা কি পুরো তালিকাটি না ছাপিয়ে মাত্র পাঁচজনের নাম ছাপিয়ে দায় সারতে পারতেন? খেলাপি তালিকায় থাকা জনকন্ঠ শিল্প পরিবারের প্রকাশনায় খবরটি যে একেবারেই ছাপা হয় নি তারই বা ব্যাখ্যা কী? সরকারের ঘোরসমর্থক হলেও এই খবরটিকে ছাপানোর মত গুরুত্বর্পূণ বিবেচনা না করা কতোটা যৌক্তিক?

(লেখকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে নেয়া)

কামাল আহমেদ : সাংবাদিক




 আরও খবর