www.muktobak.com

'শহীদ ভাই, ভালো থাকবেন ওপারে...'


 মুকসিমুল আহসান অপু    ২৩ আগস্ট ২০২০, রবিবার, ১১:৪৬    মতামত


এনটিভিতে গত ১০ বছরে সাংবাদিকতা বিশেষ করে স্ক্রিপটিংয়ের যতোটুকু শিখেছি তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশই শহিদ ভাই হাতে কলমে শিখিয়েছেন। বুঝিয়েছেন- কোথায় মন্তব্য কিংবা অভিযোগ লেখা শ্রেয়, আবার কখন জানিয়েছেন না বলে দাবি করেন বলা উচিত.... লক্ষ/উপলক্ষ/লক্ষ্য অথবা বাঁধা/বাধা কোনটি কোথায় বসবে.... এমন খুটিনাটি অনেক ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন, বুঝিয়ে বলেছেন। শুধু শব্দ চয়ন অথবা বানান ভুল ধরা নয়, শহিদ ভাইয়ের ছিল অসাধারণ নিউজ সেন্স। তবুও নিউজের হেড লাইন ঠিক করা এবং রানডাউন সাজানোর সময় পাশে ডাকতেন। বলতেন- 'পাশে বসলে শিখতে পারবে, ভুল ধরতেও পারবে, তোমরা মেধাবী, তোমাদের মধ্যে কয়েকজন আছ যারা পাশে থাকলে আমি সাহস পাই..." নিউজরুমে সবচে বয়োজেষ্ঠ শহিদ ভাই ছিলেন সবার অবিভাবকের মতো। যেকোন সমস্যা, সংকট মনযোগ দিয়ে শুনতেন, অভিজ্ঞতা থেকে আন্তরিকতার সাথে পরামর্শ দিতেন। ওনার সবচে বড় গুন- প্রত্যেকের সাথেই আলাদা একটা সম্পর্ক ছিল, সবাইকেই নিজস্ব ঢংয়ে সম্মোধণ করতেন৷ যেকোন অাড্ডায় শহিদ ভাইয়ের তুলনা তিনি নিজেই। এতো সিনিয়র অথচ প্রচন্ড আমুদে এবং আড্ডাবাজ মানুষ সচারচর হয় ন। জীবন সায়াহ্নের শেষদিনগুলোতে লাইফস্টাইলেও বেশ পরিবর্তন এনেছিলেন নিজের মধ্যে।সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনসহ সমাজ কল্যাণমূলক নানা কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন এতিমখানা। ইদের সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার আগে এতিম বাচ্চাদের জন্য বাজারে গিয়ে খাবার কিনতেন নিজ হাতে। পেশাদার সাংবাদিক না হয়ে, চাইলেই বাড়ি গাড়ি করতে পারতেন অনায়াসে। অথচ মানুষের কাছে অকপটে হাত পেতেছেন এতিমদের জন্য। বাস্তবতা কতোটা নির্মম! আজ তাঁর একমাত্র ছোট্ট সন্তান "শুদ্ধ"কে এতিম করে চলে পৃথিবী ছেড়ে। শহীদ ভাই! ভাল থাকবেন ওপারের সুন্দর ভূবনে।

মুকসিমুল আহসান অপু : সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, এনটিভি




 আরও খবর