নেদারল্যাণ্ডে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক এর পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে অসংখ্য পাখির অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবরটি নানা গণমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। বিদেশি গণমাধ্যমের বরাতে বাংলাদেশের মুলধারার গণমাধ্যমেও সেই সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে।
মুলধারার সংবাদ মাধ্যম যুগান্তরসহ কিছু বাংলা অনলাইন গণমাধ্যমে প্রিন্সিপিয়া সাইন্টিফিক ও হেলথ নাট নিউজ- এর বরাতে বলছে, নেদারল্যান্ডের হ্যাগে অবস্থিত হুইজগেন্স পার্কে শতাধিক পাখিকে মৃত পড়তে থাকতে দেখা গেছে। সে সংক্রান্ত একটি ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। বলা হচ্ছে, নেদারল্যান্ডের যোগাযোগ কতৃপক্ষ পরীক্ষামূলক ৫জি চালু করলে রেডিয়শনের কারণে পাখিদের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে।
বিডি ফ্যাক্টচেক- এর অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, পুরো সংবাদটিতে প্রথম সোর্স হিসেবে ধরা হয়েছে জন খুলস নামক একজনের তৈরিকৃত “স্টপ ফাইভজি” নামক গ্রুপ থেকে। সেটির উপর ভিত্তি করেই কিছু অনলাইন খবর হিসেবে প্রচার শুরু করে।
বিশ্ববিখ্যাত ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপ্সস এর প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, আসলেই সেখানে কিছু পাখি হতাহত হয়েছে। তবে স্থানীয় কতৃপক্ষ দাবি করেছে, মূলত বিষক্রিয়ার কারণেই কিছু পাখির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তবে সেটি ঘটে এই বছরের ১৯শে অক্টোবর থেকে ৩রা ডিসেম্বর। সেখানকার ফুড এন্ড কনজ্যুমার প্রডাক্ট সেফটি অথোরিটি নামক সরকারি প্রতিষ্ঠান মূলত দুটি ভাইরাস ওয়েস্ট নীল ভাইরাস এবং উসুতু ভাইরাসের আক্রমণকে দায়ি করছেন। এছাড়া আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা জায়গায় পাখিদের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে।
সেখানে কি আসলেই ফাইভ জি’র পরীক্ষা করার ঘটনা ঘটেনি?
এর উত্তর হচ্ছে ঘটেছে। হুয়ায়ে কতৃপক্ষ হ্যাগ শহরে একবার ফাইভ জি’র পরীক্ষামূলক সম্প্রচার করেছে। তবে সেটি হয়েছে ২৮শে জুন ২০১৮। সেখানে ২০২০ সালে প্রথম ৫জি স্থাপনের সময়সীমা হিসেবে ঠিক করা হয়েছে। নেদারল্যাণ্ডের সবচেয়ে বড় ফোন কোম্পানি কেপিএনও এই ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে।
তাছাড়াও নেদারল্যান্ড স্বাস্থ্য কাউন্সিল এবং সেখানকার ন্যাশনাল নন-আয়োনাইজিং রেডিএশন প্রটেকশন- এর সদস্য ডঃ এরিক ভ্যান রঙ্গেন ইমেইলে এক প্রশ্নের প্রেক্ষিতে স্নোপসকে জানান, ৫জি চালু হলে এমন ক্ষতি হওয়ার কোন কারণ তিনি দেখছেন না। কারণ এটি পূর্বের নেটওয়ার্কের ব্যবস্থার সাথে যথেষ্ট মানানসই।