প্রথম আলোর জঙ্গিবাদ কাভারেজ ও আমার অভিজ্ঞতা (দ্বিতীয় পর্ব)

দেশ

আহমেদ জাঈফ

(২ মাস আগে) ১ জানুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৪:০২ অপরাহ্ন

talktrain

ইলিয়াস হোসেন তাঁর ৩২ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াকে জঙ্গি বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি এক্ষেত্রে আমার সাবেক সহকর্মী শেখ সাবিহা আলমের ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী করা “চারবার ধরা পড়তে পড়তেও ফসকে গেলেন জঙ্গি জিয়া” এবং ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি করা "জঙ্গি জিয়া সম্পর্কে বাবাঃ সে ছিল ধর্মান্ধ ও এক রোখা” এই দুটি নিউজের প্রসঙ্গ টেনেছেন। ইলিয়াস হোসেন যে অবান্তর প্রশ্নটি তুলেছেন এর উত্তর তার নিজের ভিডিওতেই রয়েছে। 
প্রথম আলোতে আমি এবং শেখ সাবিহা আলম প্রায় একই সময়ে অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকতা শুরু করি। এর আগে তিনি প্রথম আলোতেই স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিবেদন করতেন। আর আমি ঢাকা ট্রিবিউনে এক বছরের সাংবাদিকতা শেষে জিআরই পরীক্ষা দিয়ে আবারও সাংবাদিকতায় ফিরেছি। অপরাধ এবং জঙ্গি বিষয়ক সাংবাদিকতা একই সময়ে একই পত্রিকায় শুরু করায় আমাদের দুজনেরই সোর্স এবং তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্র একই সাথে গড়ে ওঠে। জঙ্গি বিষয়ক অনেক সংবাদের আইডিয়া থেকে শুরু করে নিউজ প্রকাশ করা পর্যন্ত আমরা একই সাথে কাজ করেছি। আমাদের দুজনের যুগ্ম নামে জঙ্গি বিষয়ক কিছু সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে প্রথম আলোতে। 
পাঁচ বছর এক সাথে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তাই এটুকু বলতে পারি শেখ সাবিহা আলম একজন পেশাদার সাংবাদিক। তথ্য প্রাপ্তি এবং যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাঁর মাঝে কখনো অপেশাদার আচরণ দেখিনি। সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াকে নিয়ে তিনি যে দুটি সংবাদ করেছেন তা সেই পেশাদারিত্ব বজায় রেখেই করেছেন বলে মনে করি। 
ইলিয়াস হোসেন নিজেই তাঁর ভিডিওতে বলেছেন “ সাংবাদিকতার নিয়ম অনুযায়ী কারো নামের আগে খুনি, ধর্ষক , জঙ্গি এসব বিশেষণ লাগাতে হলে তাঁদেরকে আত্মস্বিকৃত হতে হবে বা তাঁদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হতে হবে।” 
প্রথম আলোতে করা শেখ সাবিহা আলমের যে দুটি নিউজ ইলিয়াস হোসেন উল্লেখ করেছেন সে দুটি নিউজে এই নিয়ম মেনেই জিয়ার নামের আগে জঙ্গি যুক্ত করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী  “চারবার ধরা পড়তে পড়তেও ফসকে গেলেন জঙ্গি জিয়া” নিউজটি প্রকাশিত হওয়ার আগে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনের ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যায় জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে জিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আবার ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি করা "জঙ্গি জিয়া সম্পর্কে বাবাঃ সে ছিল ধর্মান্ধ ও এক রোখা” নিউজটি করার সময় মেজর জিয়া কলাবাগানে জুলহাস-তনয় এবং ফয়সাল আরেফিন দীপন খুনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। 
জিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত আর সেঁটা নিশ্চয় অভিযোগ “সন্দেহাতীত” প্রমাণিত হওয়ায়ই দিয়েছেন? তাহলে জিয়ার নামের আগে জঙ্গি লিখতে প্রথম আলো বা শেখ সাবিহা আলম কি ভুল করলেন? ইলিয়াস হোসেন কি বলতে চাইলেন আর তাঁর ভক্ত ও অনুসারীরাই বা কি বুঝলেন?  
চলবে….!
বিদ্র: প্রথম আলোতে আমি অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকতা করেছি ২০১৬ সালের মার্চ  থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত। তাই ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে  হামলার ঘটনার দিন থেকে আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর “জঙ্গিবাদ বিরোধী” অভিযান এবং দেশে জঙ্গি কার্যক্রম নিয়ে নিউজ করা শুরু করি। ২০২১ সালে চাকরি ছাড়ার আগ পর্যন্ত সেটা অব্যাহত ছিলো।

(লেখকের ফেসবুক পোস্ট থেকে লেখাটি নেওয়া হয়েছে।- মুক্তবাক) 

দেশ থেকে আরও পড়ুন

সর্বশেষ