
নিউ এজে সাংবাদিকতার সময়কালিন কে আমি আমার সাংবাদিকতা জীবনের স্বর্নযুগ বলি। আমার সাংবাদিকতার মুল লার্নিংটা এখানেই হয়। সেজন্য আমি নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির ভাই ও অন্যান্য নিউজ ম্যানেজারদের কাছে কৃতজ্ঞ।
ড. ইউনুসের সাথে কবির ভাইয়ের ইন্টারভিউটা দেখলাম। ইন্টারভিউটা আমাকে চরম হতাশ করেছে। আমার টেইক হলো, এই ইন্টারভিউটায়ও সাংবাদিকতা ফেইল করেছে। এই ইন্টারভিউটাও সাংবাদিকতার যে পাবলিক সার্ভিস রোল সেটা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এই ইন্টারিম গভারমেন্ট মুলত দুইটা কাজের জন্য জনগণের পারসিভড ম্যান্ডেট পেয়েছে (এই সরকারের সরাসরি কোনো ম্যান্ডেট নাই)।তার মধ্যে প্রধানতম হলো জুলাই অভ্যুত্থানের গণহত্যার বিচার। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে ভিজিবল ও ট্যাঞ্জিবল কোনপদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা আবার সরকার কনক্রিট কোন রোডম্যাপও আনভেইল করেনি।
এই ব্যাপারে তাকে সরকার প্রধান হিসেবে ড. ইউনুস্কে একাউন্টেবল করতে অনেক প্রশ্ন করা যেত।
দ্বিতীয়ত, এই সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে বলে আসছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচার পরিবর্তন করতে হবে, রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে, রিসেট করতে হবে পুরনো সব কিছু কে বদলে ফেলে। এটা নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ গুলি নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা খুবই জরুরি ছিলো।
এই রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়টা নিয়ে সরকার হয় লিপ সার্ভিস দিচ্ছে অথবা তারা তাদের অজ্ঞতার কারণে এটা নিয়ে ট্যাঞ্জিবল কিছু করছে না। ড. ইউনুস শুধু কমিশন গঠন করে দিয়েই খালাশ। এবং ভবিষ্যতে মানুষ তাকে দোষ দিলে বলবে আমিতো কমিশন গঠন করে দিছিলাম।
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়া সরকারের পদক্ষেপগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য প্রশ্ন করা যেত, একধরনের ডেলিবারেশন হতো তাতে।
আমাদের স্টেইটক্রাফটের একটা রিসেট করতে হলে বা একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন করতে হলে ন্যাশনাল লেভেলে প্রচুর ডেলিবারেশন্স এর প্রয়োজন ছিলো। সেই প্রক্রিয়াতে এমনকি আন্তর্জাতিক সব রাষ্ট্র বিজ্ঞানিদের কাছে থেকে পরামর্শ নেয়া যেত।
প্রাথমিকভাবে এই সরকারের উচিত ছিলো রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য নাশনাল লেভেলে হাই পাওয়ারড একটা কমিশন গঠন করা, ছয়টি নয়।এবং তাদের উচিত হতো সিরিজ অব ডায়ালগ করা। যে ছয়টা কমিশন করা হইছে এই ছয়টা কমিশনের বিষয়গুলো একটা আরেকটার সাথে অংগাঅংগিভাবে জড়িত। কিন্তু এখন কি হবে, এরা ছয় ধরনের রেকমেন্ডশন দিবে যা কিনা একে অপরের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। ফলে ফাইনলি জাতি একটা অশ্বডিম্ব পাওয়া ছাড়া প্র্যাক্টিক্যাল কোন রাষ্ট্রসংস্কারের প্রস্তাবনা পাওয়া যাবে না বলেই আমার আশংকা। সুতরাং এই বিষয়গুলা নিয়ে প্রশ্নতোলা জরুরী ছিলো।
পুরা ইন্টারভিউটায় মুলত এই দুটি ব্যাপারকে কেন্দ্র করেই হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু তা হয় নি।
অন্যদিকে কবির ভাই মানুষকে ইম্প্রেস করার জন্যও দু একটা আননেসেসারি প্রশ্ন করেছেন বলে আমার ধারণা। যেমন, ড. ইউনুস জিজ্ঞেস করা যে তিনি প্রধানমন্ত্রী না হয়ে প্রধান উপদেষ্টা হলেন কেন। এই প্রশ্নের উত্তর সবার জানা এবং এই প্রশ্ন করার মধ্যে দিয়ে সরকার প্রধানকে এখানে একাউন্টেবল করার কোন বিষয় নাই। সুতরাং এটা একটা আননেসেসারি প্রশ্ন। এই প্রশ্ন তিনি তার কলামে লিখে রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে আসার আহবান জানাতে পারতেন।
তাইব আহমেদ : সাংবাদিক, কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডিরত