
ভূমিকা : ডাক্তার জাকির নায়েক বিশ্বব্যাপী পরিচিত মুখ। ভারতের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে তিনি সপরিবারে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন। নিজের জীবন নিয়ে ইউটিউবে তার 'জাকির নায়েক : মাই লাইফ, মাই স্টোরি' শীর্ষক প্রায় সাড়ে তিনঘণ্টার বক্তব্য থেকে অনুবাদ করে 'আমার জীবনের গল্প' নামে একটি বই প্রকাশ করে ইলহাম প্রকাশনী। বইটিতে ইসলাম প্রচারে তার ভূমিকা, জীবন দর্শনের পাশাপাশি ভারতের বিজেপি সরকারের নিপীড়নের বর্ণনা দিয়েছেন। প্রসঙ্গক্রমে এসেছে বাংলাদেশের নামও। হলি আর্টিজানের হামলার পর বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃত ভুলে ভয়ংকর নিপীড়নের মুখে শিকার হতে হয় তাঁকে। বই থেকে ওই অংশটুকু পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো। - মুক্তবাক
২০১৪ সালে ভারতে ক্ষমতার পালাবদল হয়। বিজেপি ক্ষমতায় আসে। তারা মুসলিম বিদ্বেষী। তারা ক্ষমতায় আসার পর ভারতের চিত্র বদলে যায়। ২০১৬ সালে আমার ওমরায় যাবার কথা। ২০০২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর পরিবার নিয়ে আমি ওমরাহতে যেতাম।
১ জুলাই বাংলাদেশের ঢাকায় একটি রেস্টুরেন্টে হামলা হয়। হলি আর্টিজান হামলা। বাংলাদেশের একটি ইংরেজি সংবাদপত্র একটি প্রতিবেদন ছাপায়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলাকারীদের একজন নাকি আমার ভক্ত ছিল! প্রতিবেদনটি ছাপা হয় ৩ জুলাই।
৪ জুলাই ভারতের প্রায় সবগুলো সংবাদপত্র প্রচার করে 'ডাক্তার জাকির নায়েকে ঢাকায় হামলায় মদদদাতা, তার উৎসাহে ঢাকায় অমুসলিমদের ওপর হামলা হয়'। তিনদিন পর ঢাকার সংবাদপত্র আরেকটি প্রতিবেদন ছাপে। তারা জানায়, 'আমরা বলিনি ডাক্তার জাকির নায়েক হামলার মদদদাতা। আমরা বলেছি জাকির নায়েকের একজন ভক্ত হামলা করেছে'।
ফেসবুকে তখন আমার ১ কোটি ৪০ লাখ ভক্তের মধ্যে মাত্র একজন হামলা করল, আর তার দায়ভার পড়ল আমার ওপর! বাংলাদেশের সংবাদপত্র তাদের প্রতিবেদন সংশোধন করলেও ভারতের সংবাদপত্র আর সংশোধনের দিকে আগায়নি। তখন আমরা বুঝে ফেলি, এটা ভারত সরকারে পরিকল্পনা। ...................।
১৭ নভেম্বর ২০১৬। ভারত সরকার আমার সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আমি তখন দেশের বাইরে ছিলাম। আমি ভারতে এসে একটি সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। কেউ কেউ ভাবতে পারেন আমি হয়তো পালিয়ে ভারত থেকে চলে এসেছি। আসলে আমাকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।